শিয়ালদহের আরও তিন প্ল্যাটফর্ম থেকে শুরু ১২ কামরার লোকাল, উঠতে পারবেন হাজারেরও বেশি যাত্রী
দেশের ব্যস্ততম রেলস্টেশনগুলির মধ্যে অন্যতম শিয়ালদহ স্টেশনে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ যাত্রী যাতায়াত করেন। আধুনিকীকরণের জন্য গত কয়েক দিন ধরে পরিষেবা ব্যাহত ছিল। এ নিয়ে যাত্রী অসন্তোষ ছিল।
অবশেষে কলকাতার শিয়ালদহ স্টেশনের ১, ২ এবং ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে ১২ কামরার লোকাল ট্রেন ছাড়া শুরু হল। শনিবার থেকেই তিনটি প্ল্যাটফর্ম সচল হয়ে গিয়েছে। আর কয়েক দিনের মধ্যে ৩ এবং ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্ম সম্প্রসারণের কাজ শেষ হয়ে যাবে। তখন ওই দু’টি প্ল্যাটফর্ম থেকেও ১২ কোচের লোকাল চলাচল শুরু হবে বলে জানাল রেল।
দেশের ব্যস্ততম রেলস্টেশনগুলির মধ্যে অন্যতম শিয়ালদহ স্টেশন। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ যাত্রীর যাতায়াত এখানে। কিন্তু, আধুনিকীকরণের জন্য গত কয়েক দিন ধরে পরিষেবা ব্যাহত ছিল। তীব্র গরমের মধ্যে দীর্ঘ প্রতীক্ষা, ভিড়-ঠাসা কামরা, দরজার বাইরে ঝুলন্ত যাত্রী— এ সব দৃশ্য দেখা গিয়েছে। লোকাল ট্রেনের পাশাপাশি দূরপাল্লার ট্রেনগুলিও প্ল্যাটফর্মে ঢোকার আগে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থেকেছে। শিয়ালদহ স্টেশনে ক্ষিপ্ত যাত্রীরা ভাঙচুরও চালিয়েছেন। এই প্রেক্ষিতে শনিবার পূর্ব রেলের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে, তারা সর্বদা শিয়ালদহ স্টেশনের পরিষেবাকে উন্নত থেকে থেকে উন্নততর করার প্রচেষ্টা করে চলেছে। তারই নবতম সংযোজন হল শিয়ালদহ স্টেশনের জন্য অত্যাধুনিক ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিং কেবিনের প্রতিস্থাপন।
রেল সূত্রে খবর, শিয়ালদহ ডিভিশনে প্রতি দিন প্রায় ৮৯২টি লোকাল ট্রেন চলাচল করে। কিন্তু, প্লাটফর্মের দৈর্ঘ্য কম থাকার জন্য শিয়ালদহ স্টেশনে ১ থেকে ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্ম পর্যন্ত ১২ বগির ট্রেন চালানো যেত না। আগে শুধু ৬ এবং ৭ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে ১২ কামরার লোকাল ট্রেন চলত।
পূর্ব রেলের শিয়ালদহ শাখায় তিনটি লাইনের ট্রেন যাতায়াত করে— শিয়ালদহ দক্ষিণ, শিয়ালদহ মেন অর্থাৎ শিয়ালদহ-রানাঘাট-কৃষ্ণনগর এবং শিয়ালদহ উত্তর অর্থাৎ শিয়ালদহ-বনগাঁ বিভাগ। এর মধ্যে শিয়ালদহ দক্ষিণের সমস্ত ইএমইউ ট্রেনকে ১২ বগির করে দেওয়া হলেও বাকি দুই বিভাগের সব ট্রেন ১২ কামরার ছিল না। বরং বেশির ভাগ ট্রেন ছিল নয় কামরার। কিন্তু ওই ট্রেনগুলিতে যে ভিড় হয়, তাতে ১২ কামরার ট্রেনের প্রয়োজন ছিল। রেলের লক্ষ্য শিয়ালদহের সব শাখাতেই ১২ কামরার ট্রেন চালানো। সেটা আর কয়েক মাসের মধ্যেই হয়ে যাবে বলে জানাচ্ছেন কর্তৃপক্ষ। শনিবার তাঁরা জানিয়েছেন, যাত্রীদের কথা মাথায় রেখে ১ থেকে ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মের সম্প্রসারণ হয়েছে। এর মধ্যে ৩ এবং ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মের সম্প্রসারণ খুব তাড়াতাড়িই শেষ হবে। এর ফলে আরও বেশি সংখ্যক যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে যাতায়াত করতে পারবেন। রেলের হিসাব অনুযায়ী, ১২ বগির ট্রেন চালু হলে প্রায় হাজার জন অতিরিক্ত যাত্রী যাতায়াত করতে পারবেন। ট্রেনে আসন সংখ্যাও প্রায় ২৫ শতাংশ বেশি হবে।
শিয়ালদহ স্টেশন থেকে বারাসত, ব্যারাকপুর, শান্তিপুর, নৈহাটি, শ্যামনগর, বনগাঁ, ডানকুনি, সোদপুর, খড়দহ-সহ বিভিন্ন স্থানের যাত্রীরা যাতায়াত করে থাকেন। নয় কামরার ট্রেনে বিধাননগর এবং দমদম স্টেশন থেকে যাত্রীদের উঠতে অসুবিধা হত। তবে ১২ কামরার ট্রেন চালু হলে সেই অসুবিধা অনেকাংশে দূর হবে বলে আশাবাদী রেল।
এ নিয়ে পূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, ‘‘পূর্ব রেল নির্ভরযোগ্য এবং যাত্রী-কেন্দ্রিক পরিষেবা প্রদানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ১, ২ এবং ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে ১২ কামরার ট্রেন চালু হওয়ার ফলে যাত্রীরা আরও সুবিধাজনক এবং নিরাপদ ভাবে যাত্রা করতে পারবেন।’’
What's Your Reaction?