Nadia : ব্রিটিশ শাসনকালে প্রতিষ্ঠিত রাম সীতা 10 : U Bangla TV
Nadia : ব্রিটিশ শাসনকালে প্রতিষ্ঠিত রাম সীতা 10 : U Bangla TV
অযোধ্যা নয় নদিয়াতেই রয়েছে অযোধ্যা নয় পশ্চিমবাংলার নদিয়াতে রয়েছে ব্রিটিশ শাসনকালে প্রতিষ্ঠিত রাম সীতা। ২৫৬ বছর পূর্বে ব্রিটিশ শাসনকাল প্রতিষ্ঠিত রামমন্দির। ব্রিটিশ শাসনকালেই রাজা কৃষ্ণচন্দ্র এই রামমন্দির প্রতিষ্ঠিত করেন। এই রাম মন্দির সম্পর্কে অনেকে জানলেও কেবলমাত্র গুটিকয়েক ভক্তদের সেবায় পূজিত হয় রাম মন্দিরের কষ্ঠী পাথরের ভগবান রাম এবং সীতার বিগ্রহ।পূজারী সহ সাধারণ মানুষের দাবি এই মন্দিরের দিকে নজর দিলে এই মন্দিরের আরও উন্নতি হবে। নদিয়ার মাজদিয়া থেকে ৩ কিলো মিটার দুরে শিবনিবাস গ্রাম। তৎকালীন মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র বাংলায় বর্গী আক্রমণের সময় তাঁর রাজধানী নদিয়ার সদর শহর কৃষ্ণনগর থেকে সরিয়ে শিবনিবাসে চালু করেছিলেন এবং শিবের নামে নামকরণ করেন শিবনিবাস। এখানে তিনি এক সুন্দর রাজপ্রাসাদ ও কয়েকটি মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।তার মধ্যে এখন মাত্র তিনটি মন্দির অবশিষ্ট আছে। দুটি শিব মন্দির একটি রাম মন্দির। প্রতিটি মন্দিরের উচ্চতা ৬০ ফুট। এই শিবনিবাসে রাজার রাজধানী প্রতিষ্ঠার একটি কাহিনী আছে। মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র নসরত খাঁ নামক এক দুর্ধর্ষ ডাকাতকে দমন করতে মাজদিয়ার কাছে এক গভীর অরণ্যে উপস্থিত হয়ে ডাকাতকে দমন করে সেখানে তিনি একরাত অবস্থান করেন।পরদিন সকালবেলায় তিনি যখন নদীতীরে মুখ ধুচ্ছিলেন তখন একটি রুইমাছ জল থেকে লাফিয়ে মহারাজের সামনে এসে পড়ে।আনুলিয়া নিবাসী কৃষ্ণরাম নামক মহারাজের এক আত্মীয় তখন মহারাজকে বলেন এইস্থান অতি রমণীয়, উপরন্তু রাজভোগ্য সামগ্রী নিজে থেকেই মহারাজের সামনে এসে হাজির হয়।তাই এই স্থানে মহারাজ বাস করলে মহারাজের নিশ্চয়ই ভাল হবে।মহারাজও তখন বর্গীর অত্যাচার থেকে বাঁচতে এই রকমই একটা নিরাপদ জায়গা খুঁজছিলেন।স্থানটি মনোনীত হলে রাজা নদীবেষ্টিত করে স্থানটি সুরক্ষিত করেন।এই শিবনিবাসেই মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র মহাসমারোহে অগ্নিহোত্র বাজপেয় যজ্ঞ সম্পন্ন করেন। এই উপলক্ষ্যে কাশী, কাঞ্চি প্রভৃতি স্থান থেকে সমাগত পণ্ডিত মণ্ডলী তাঁকে 'অগ্নিহোত্রী বাজপেয়ী' আখ্যা প্রদান করেন। সেই সময়ে শিবনিবাস কাশীতুল্য বলে পরিগণিত হত রাজার প্রতিষ্ঠাকাল ১৭৫৪ খ্রিষ্টাব্দ। একটি বড় ৯ ফুট কষ্টিপাথরের শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠিত করে নিত্যপূজো শুরু করেন, পাশেই আরো একটি শিব মন্দির 'রাজ্ঞীশ্বর' নামে দ্বিতীয় মন্দির এবং রাম মন্দির প্রতিষ্ঠিত করেন।প্রতিষ্ঠাকাল ১৬৮৪ শকাব্দ অর্থাৎ ১৭৬২ খ্রিষ্টাব্দ। মন্দিরে একটি প্রতিষ্ঠাফলক আছে।প্রতিষ্ঠাফলকে উৎকীর্ণ লিপি থেকে জানা যায় যে মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের দ্বিতীয়া মহিষী স্বয়ং যেন মূর্তিমতী লক্ষ্মী ছিলেন। সম্ভবত এই মন্দিরটি মহারাজা তাঁর দ্বিতীয়া মহিষীর জন্য নির্মাণ করেছিলেন এবং প্রথমটি প্রথম মহিষীর জন্য। এই মন্দিরের শিবলিঙ্গ প্রথম মন্দিরের চেয়ে কিছুটা ছোট উচ্চতা সাড়ে সাত ফুট এর পাশেই রামসীতার মন্দির।মন্দিরটি উঁচু ভিত্তিবেদির উপর স্থাপিত। আংশিক দালান আকারের কোঠার উপর একটি শিখর স্থাপিত যা অনেকটা বর্গক্ষেত্রাকার। দালানের প্রতিটি ছাদ সমদ্বিবাহু ট্রাপিজিয়াম আকৃতির এবং গর্ভগৃহের প্রতিটি ছাদ ত্রিভুজাকার না হয়ে অনেকটা ঘন্টার লম্বচ্ছেদের মতো বিরল আকৃতির। দালান ও শিখরের খিলানগুলি গথিক রীতি অনুযায়ী নির্মিত। প্রতিষ্ঠাকাল ১৭৬২ খ্রিষ্টাব্দ। বলা বাহুল্য, শিবনিবাসের এই মন্দিরগুলিতে'টেরাকোটা'র কোন কাজ নেই। ১৮২৪ খ্রিস্টাব্দে বিশপ হেয়ার সাহেব নৌকা করে ঢাকা যাওয়ার পথে এখানে নেমে মন্দিরগুলি দেখেন এবং মুগ্ধ হয়েছিলেন। মন্দিরগুলির বিবরণ ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দে লন্ডন থেকে প্রকাশিত জার্নালে প্রকাশ করেন। #banglanews #nadia #nadianews @ubanglatvofficial
What's Your Reaction?