Medinipur : উনুনের আগুনে ঝাঁপ দেওয়াই সেই মেয়েই আজ IFA এর মহিলা রেফারি "তারজুনা" : U Bangla TV

Medinipur : উনুনের আগুনে ঝাঁপ দেওয়াই সেই মেয়েই আজ IFA এর মহিলা রেফারি "তারজুনা" : U Bangla TV

Feb 1, 2024 - 18:05
 0  5

ছোটো বেলায় ফুটবল খেলতে গিয়ে আগুনে পুড়ে গিয়েছিলো গোটা শরীর! আজ সেই মেয়েই IFA এর মহিলা রেফারি "তারজুনা"। গড়বেতা, পশ্চিম মেদিনীপুর: ছোটবেলায় ফুটবল খেলতে গিয়ে, ধানসেদ্ধ করার উনুনের আগুনে ঝাঁপ দিয়ে, পুড়ে গিয়েছিল শরীরের বেশির ভাগ অংশ! এমনভাবে পুড়ে গিয়েছিল যে জীবন যায় যায় অবস্থা! দীর্ঘদিন চিকিৎসা করার পর সুস্থ হয়ে উঠে তারজুনা। ছোটবেলায় কাকুর সাথে ফুটবল খেলতে খেলতে, মাঠের পাশে থাকা উননে বল পড়ে গেলে আগুনের মধ্যে ঝাঁপ দিয়ে দেয়। এতটাই ফুটবল প্রেম যে আগুনে পড়ে গিয়েও ফুটবলটি ছাড়েনি সে। একাই কোনভাবে উনুন থেকে বেরিয়ে আসে। তবে কাহিনী এখানেই শেষ নয়! ছোটবেলায় খেলতে যাবার সময় মুসলিম সমাজের মুরুব্বীরা তারজুনার বাড়িতে এসে তার পরিবারের কাছে চাপ দিতে থাকে। মুরুব্বীরা জানায়, মুসলিম মেয়েদের হাফপ্যান্ট পরে খেলতে যাওয়া শোভা পায়না। মুরুব্বিরা আরো বলেন, মেয়ে বড়ো হয়েছে বিয়ে দিয়ে দাও, ফুটবল খেলা এসব ছেলেদের কাজ। কেউ কেউ আবার হুমকির সুরে বলতে থাকে, জঙ্গলের রাস্তা দিয়ে হাফপ্যান্ট পরে যাতায়াত করে, কিছু হয়ে গেলে তাদেরকে দোষারোপ করতে পারবে না। প্রথমে বাড়ির লোক কিছুটা ভয়ে স্তম্ভিত হয়ে মেয়েকে একপ্রকার খেলতে যেতে বাধা দেয়। তবে তারজুনা মন্ডল সেইসব মুরুব্বীদের কথা সোনার পাত্রী ছিল না। সবকিছুকে পিছনে ফেলে ফুটবলকে লক্ষ্য করে এগিয়ে চলে মেটাডহর গ্রামের ফুটবল অন্ত্র প্রাণ "তারজুনা"। এ কাহিনী পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গড়বেতা ব্লকের অন্তর্গত মেটাডহর গ্রামের এক দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারের তারজুনা মন্ডল এর, বাবা তৈমুর আলি মন্ডল, মা সাকিনা বিবি। মা গৃহবধূ, বাবা দিন মজুর। ছাত্র অবস্থায় ডিগ্রী স্যানাটোরিয়াম উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সময় প্রথমে ছেলেদের সাথেই ফুটবল খেলতে শুরু করে তারজুনা। তার খেলার আগ্রহ দেখে পরে বিদ্যালয়ে খেলার শিক্ষক হিমাদ্রী মন্ডল মেয়েদের নিয়ে একটি ফুটবল টিম গঠন করে। সেইখানে ভালো খেলার পর, শালবনী জাগরণের হয়ে ফুটবল খেলে তারজুনা মন্ডল। শালবনী জাগরণে খেলতে খেলতে কেশিয়াড়ি থেকে ডাক আসে ফুটবল খেলানোর জন্য। সেখান থেকে জেলারস্তর, রাজ্যস্তর ও জাতীয়স্তরে ফুটবল খেলে খেতাব অর্জন করে গড়বেতার তারজুনা। তার ঝুলিতে এসেছে একাধিক মেডেল, ট্রফি ও সার্টিফিকেট। এখানেও আবার ট্রাজেডি, বাড়িতে না থাকার সুযোগ নিয়ে কয়েকবার সার্টিফিকেট ও মেডেল চুরি করে নিয়ে গেছে দুষ্কৃতীরা। এরপর রাজ্যস্তরে বেশ কয়েকবার ফুটবল খেলা পরিচালনা করে তারজুনা। পরবর্তীতে একটু একটু করে আজ IFA এর একজন সুদক্ষ মহিলা রেফারি হিসেবে নাম করেছে। বেশ কয়েকটি খেলাও দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করে "তারজুনা"। ভবিষ্যতে ফুটবলকে নিয়েই জীবন ও জীবিকার পথ বেছে নিয়েছে সে। আগামীতে মহিলা ফুটবল খেলোয়াড়দের পথপ্রদর্শক হতে চায় সে। তারজুনার মা সাকিনা বিবি জানান, মেয়েকে অনেক কটু কথা শুনতে হয়েছে গ্রামের মোড়লদের কাছ থেকে। তারাও ওর পাশে দাঁড়াতে পারেননি, কষ্ট দিয়েছে ওকে। তবে ওর কঠিন জেদ এর কাছে হার মানতে হয়েছে তাদের। আজকে ওর সাফল্যে সত্যিই তারা খুব গর্বিত ও আনন্দিত। তারজুনার মা বলেন ও ফুটবল নিয়েই এগিয়ে চলুক। তারজুনার এই সাফল্যে খুশি তার প্রথম ফুটবল শিক্ষক হিমাদ্রী মন্ডল সহ ডিগ্রী স্যানাটোরিয়াম উচ্চ বিদ্যালয় এর সকল শিক্ষক শিক্ষকরাও । #paschimmedinipur #paschimmedinipurnews #banglanews #newstoday  @ubanglatvofficial 

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow