বাংলায় নয়া জঙ্গি মডিউলের হদিশ! কী এই ‘শাহদত’?
সূত্রের দাবি, বাংলাদেশের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার-উল-ইসলামের সদস্য ছিল হবিবুল্লা।
1.
খাগড়গড় বিস্ফোরণের পর কেটে গিয়েছে এক দশক। এর মধ্যে নাকে আসেনি বারুদের গন্ধ। চোখে পড়েনি বর্ধমানে সন্দেহভাজনদের আনাগোনাও। মোটের উপর শান্তিতেই কাটছিল দিন। ১০ বছর পর সেই বর্ধমানেই আবার নয়া জঙ্গি মডিউলের হদিশ-‘শাহদত’। বর্ধমান থেকে তিন সন্দেহভাজন আটক হতেই ফাঁস হয়েছে সেই চক্রের পর্দা। মনে করা হচ্ছে, বাংলাদেশে ‘অপারেটিং’ এই জঙ্গি মডিউলের বাংলার অন্যতম চাঁই মহম্মদ হবিবুল্লা। মগজ ধোলাই করে নতুন প্রজন্মকে এই এই চক্রে জড়িয়ে ফেলাই ছিল তার মূল কাজ।
শনিবার কাঁকসা থানা থেকে প্রায় ৫০০ মিটার দূরে মীরেপাড়া এলাকায় হানা দেয় রাজ্য এসটিএফ। সেখানে মহম্মদ হবিবুল্লা নামে এক কলেজ ছাত্রকে আটক করা হয়। কাঁকসা থানায় দীর্ঘক্ষণ জেরার পর তাকে গ্রেপ্তার করে এসটিএফ। তদন্ত যত এগোচ্ছে ততই সামনে আসছে নতুন-নতুন তথ্য। সূত্রের দাবি, বাংলাদেশের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার-উল-ইসলামের সদস্য ছিল হবিবুল্লা। সেই সংগঠনের অন্যতম ‘ফিদায়েঁ’ ইসমাইল শাহদত। মনে করা হচ্ছে তার নামেই তৈরি হয়েছে নতুন এই মডিউল। যার অর্থ, নিজে থেকে শহিদ হওয়া। অর্থাৎ আত্মঘাতী জঙ্গি বা ‘ফিদায়েঁ’। লক্ষ্য়পূরণ করতে নিজের জীবন বিসর্জন দিতেও পিছপা হব না, এই সংকল্পের বীজই বুনে দেওয়া হত সদস্যদের মধ্যে। সূত্রের দাবি, বিদেশে আত্মগোপন করে সালাউদ্দিন নাসের মডিউলটি অপারেট করে।
মূলত সোশাল মিডিয়ায় জাল বিছিয়ে যুবক-যুবতীদের দলে টানত তারা। প্রথমে চলত স্ক্যানিং। দেখা হত, কারা ইসলামিক মৌলবাদের প্রতি আগ্রহী। তার পর অডিও মেসেজ পাঠিয়ে চলত মগজ ধোলাই। ব্যবহার হত বিশেষ মোবাইল অ্যাপ ‘বিপ’। সোশাল মিডিয়ায় বিশেষ এক গ্রুপে চলত কথাবার্তা। সেই গ্রুপেই এখন কড়া নজর তদন্তকারীদের। সূত্রের দাবি, একইভাবেই ‘রিক্রুট’ করা হয়েছিল হবিবুল্লাকে। কম্পিউটার সায়েন্সের এই পড়ুয়া বেশিরভাগ সময়ই মোবাইল, ল্যাপটপে মুখ গুজে থাকত। এলাকায় কারও সঙ্গে বিশেষ মিশত না বলেই দাবি পড়শিদের। তবে আপাত শান্তশিষ্ট, মেধাবী হবিবুল্লা যে জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকবে, তা মানতে পারছে না এলাকার বাসিন্দারা। তাদের কথায়, এত ছোট একটা ছেলে এই কাজ করবে! বিশ্বাসই হচ্ছে না।
What's Your Reaction?