অস্তিত্বহীনতায় শান্তিপুরের ঐতিহ্যবাহী সুরধুনী নদী | Nadia

অস্তিত্বহীনতায় শান্তিপুরের ঐতিহ্যবাহী সুরধুনী নদী | Nadia

Jul 23, 2023 - 18:45
 0  2

বহু প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী নদীর সংস্কারের জন্য আর্থিক সাহায্য চেয়ে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী দপ্তরে চিঠি পরিবেশ ভাবনা মঞ্চের, নদী সংস্কারের বিষয় নিয়েও বিজিপি সংসদ ও তৃণমূল বিধায়কের রাজনৈতিক তরজা।গোটা একটা নদীকে তিলে তিলে গ্রাস করেছিল মাফিয়ারা। আইনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে ক্ষমতার জোরে মাটি ফেলে ভরাট করা হয় নদীটি৷ তারই জেরে আজ অস্তিত্বহীনতায় শান্তিপুরের ঐতিহ্যবাহী সুরধুনী নদী। কথায় আছে বহু প্রাচীনকালে এই নদী পথ দিয়ে শান্তিপুরের অদ্বৈত মহাপ্রভুর কাছে বারবার এসেছিলেন শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু। শুধু তাই নয়, নদীয়ার নবদ্বীপের বিভিন্ন তীর্থস্থান থেকে এই নদী পথেই শান্তিপুরে আসতেন বিভিন্ন মুনি ঋষিরা। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনের পর থেকেই ধীরে ধীরে শুকিয়ে যায় নদীটি৷ আর জল না থাকার কারণে পড়তে শুরু করে পলি, আর তারই সুযোগ নিয়ে শুরু হয় মাফিয়াদের দখলবাজি। এরপর নড়ে চড়ে বসে বিভিন্ন সংগঠনের সদস্য থেকে শুরু করে রাজনৈতিক নেতৃত্বরা। তবে শাসকের পক্ষ থেকে নদীটি বাঁচানোর জন্য কখনো সেই ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। পরিবেশকর্মীদের সরকারী দপ্তরে চিঠি, আরটিআই আইনে তথ্য চাওয়া সহ নিরন্তর আন্দোলনের চাপে বহু টাল বাহানার পরে নড়েচড়ে বসে ইরিগেশন দপ্তর৷ আসেন নদী পর্যবেক্ষণে। যদিও বেশ কয়েকবার পর্যবেক্ষণের পরে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের কাছে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়৷ সেইমত নদীর পার্শ্ববর্তী এলাকায় তদন্ত শুরু করে পুলিশ। আদৌ কি এটি নদী ছিল তা জানার চেষ্টা করে বসবাসকারীদের কাছ থেকে। যদিও একাধিকবার তদন্তের পর পুলিশ জানতে পারে প্রাচীন কাল থেকেই সুরধুনী নদীটির অস্তিত্ব ছিলো৷ নবদ্বীপের কাছের গঙ্গানদী থেকে শুরু হয়ে শান্তিপুরের উত্তর দিক দিয়ে বয়ে যাওয়া স্রোতস্বিনী এই নদীটির নাম করণ করেন স্বয়ং অদ্বৈত আচার্য৷ বর্তমান সময়ে নদীটির করুন দশার হাত থেকে বাঁচানোর লক্ষ্যে লাগাতার আন্দোল করে এসেছে শান্তিপুরের ৪২ টি সংগঠনের যৌথ মঞ্চ পরিবেশ ভাবনা মঞ্চ নামে একটি সংস্থা। আজ তারা সাফল্যের পথে। সংগঠনের এক সদস্য জানিয়েছেন, নদীটি সংস্কারের জন্য ইতিমধ্যে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ইরিগেশন দপ্তরে ৫০ লক্ষ টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ওই অর্থে ১৪ কিমি ব্যাপী নদীটি সংস্কার সম্ভব নয়৷ তাই আরো অর্থের প্রয়োজন। সেইমত এবার বড়সড় পদক্ষেপে পরিবেশ ভাবনা মঞ্চের সদস্যদের। তারা শরণাপন্ন হতে চলেছেন দেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, সুপ্রীম কোর্টের প্রধান বিচারপতি, জাতীয় জল সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক সহ একাধিক দপ্তরে। চিঠির মাধ্যমেই তারা ওই সকল দপ্তরকে জানাচ্ছেন বলে জানা গেছে। যদিও আগামী দিনে কেন্দ্র সরকারের অনুদান পাওয়া মাত্রই শুরু হয়ে যাবে নদীটির সংস্কার অর্থাৎ খননের কাজ। পরিবেশ ভাবনা মঞ্চের সদস্যরা এও জানিয়েছেন, নদীটি পুনঃসংস্কার হওয়ার পরে বিভিন্ন দিক দিয়ে উপকৃত হবে মানুষ। যেমন নদীপথে যাতায়াত, বন্যা হওয়া থেকে রক্ষা, মৎস্যজীবীদের ভীষণভাবে উপকৃত হওয়ার সম্ভাবনা। আর অন্যদিকে বহু প্রাচীন সুরধুনী নদীর সৌন্দর্যতা উপভোগ করতে পারবে গোটা শান্তিপুরবাসী। যদিও এদিন বিজেপি সংসদ জগন্নাথ সরকারকে একটি স্মারকলিপি জমা দিতে যান সংগঠন পরিবেশ ভাবনা মঞ্চ। সেখানেই রাজ্যের শাসক দল ও শান্তিপুরের বিধায়ককে খোঁচা দিয়ে বিজেপি সাংসদ বলেন, সুরধুনী নদী গঙ্গার মূল শাখা ছিল, কিন্তু নদীটি আজ দখল হয়ে যাচ্ছে, বাড়িঘর উঠে যাচ্ছে, জমি মাফিয়া দখলদারি চালাচ্ছে। সেখানে আমি আশ্চর্য হই, যে পরিবারের বিধায়ক সেই অদ্বৈত পরিবারের একজন সন্তান তার পক্ষ থেকে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। অন্যদিকে বিজেপি সংসদ জগন্নাথ সরকারের মন্তব্য উড়িয়ে দিয়ে বিধায়ক ব্রজ কিশোর গোস্বামী বলেন, নদীটির সংস্কারের বিষয় নিয়ে প্রথমে আমিই এগিয়ে আসি। আর তৎকালীন মন্ত্রী পার্থ ভৌমিকের কাছে চিঠি আমি পাঠিয়েছিলাম, আর সেখান থেকেই রাজ্য সরকার ইরিগেশন দপ্তরে ৫০ লক্ষ টাকা অনুদান করেছে নদীটির সংস্কারের জন্য। তবে সব নদী-নালায় রাষ্ট্রীয়ত্ব সম্পত্তির মধ্যে পড়ে না। বিজেপি সংসদ জগন্নাথ সরকার আমার নামে যায় মন্তব্য করুক না কেন আমি তার কথায় গুরুত্ব দিতে নারাজ। শান্তিপুরের বিধায়ক হিসাবে আমি আমার কাজ করে যাব। #nadia #nadianews #breakingnews #newstoday #newslive #bjp #banglanews  @ubanglatvofficial 

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow