Jalpaiguri : বিদ্যুৎ নেই তাই পেট্রোল পাম্পের আলোই পড়াশোনা
Jalpaiguri : বিদ্যুৎ নেই তাই পেট্রোল পাম্পের আলোই পড়াশোনা
দীর্ঘ ১০ বছর ধরে বিদ্যুৎহীন, দিন দিন কেরোসিনের মুল্য আকাশ ছুঁচ্ছে, তাই বলে কি পড়াশোনা হবে না? ঠিক যেমন টা ইশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর পড়েছেন ল্যাম্পপোস্ট এর আলোই, তেমনি জলপাইগুড়িতে দুস্থ পরিবারের দুই খুদেকে দেখা যাচ্ছে পেট্রোলপাম্পের লাইটের আলোয় পড়াশোনা করছেন। বাড়িতে বিদ্যুৎ নেই, কেরোসিন কিনতেও হিমসিম খেতে হয়। এই পরিস্থিতিতে অন্ধকারে ডুবে থাকে পরিবার। তবে ছেলে ও মেয়ে পড়াশুনা করবে কি করে? সেই চিন্তায় ডুবে থাকতো চরম দুঃখ কষ্টে থাকা বাবা মা। তবে ছেলে মেয়ের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে একপ্রকার বাধ্য হয়ে রাস্তার পাশে পেট্রল পাম্পের লাইটের আলোতেই খোলা আকাশের নিচে এককোনে বসে পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছেন দুই খুদে। জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের পাহারপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন পাহাড়পুর মোড় সংলগ্ন বালাপাড়া জাতীয় সড়কের পাশে পেট্রোল পাম্প সংলগ্ন এলাকার দৃশ্য। প্রত্যেক দিন সন্ধ্যার পর এভাবে পড়াশোনা করে বেশ কয়েক বছর ধরে। পরিবারের বড় ছেলে বর্তমানে পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ে। প্রথম শ্রেণী থেকেই এভাবে পড়াশোনা করে চলেছে। তার বোনও প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছে কয়েক মাস হলো। তারও দাদার সঙ্গে পেট্রোল পাম্পেই হাতে খড়ি হচ্ছে।জানা গেছে স্বামী স্ত্রী ও তিন ছেলে মেয়েকে নিয়ে খুব দুঃখ কষ্টের মধ্যে দিয়ে চলছে সংসার। আগে বিদ্যুৎ ছিল বাড়িতে। দুস্থ পরিবারের কর্তা আপন তন্ত্রের দাবি তার পিতা অতিরিক্ত বিদ্যুতের বিল মেটাতে না পারায় আত্মহত্যা করেছিলেন। বিদ্যুৎ দপ্তরের তরফে অতিরিক্ত ভুয়ো বিল পাঠানো হয় বলে অভিযোগ আপন তন্ত্রের। আপন তন্ত্রের বাবা নীরেন তন্ত্রকে অতিরিক্ত বিল পাঠানোয় বিল মেটাতে পারেনি। বিদ্যুৎ দপ্তরের পক্ষ থেকে বিগত প্রায় ১০ বছর আগে বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার পাশাপাশি বিদ্যুৎ দপ্তরের পক্ষ থেকে পুলিশে অভিযোগ জানানো হলে আপন তন্ত্রের পিতা নীরেন তন্ত্র আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয় বলো অভিযোগ। তারপর থেকেই দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর কুপির আলোতেই শুধুমাত্র রান্নাবান্না খাওয়া দাওয়া। সামান্য দিনমজুর আপন তন্ত্রের এক ছেলে ও দুই মেয়েকে পড়াশোনা করানোর জন্য বাড়িতে আলো না থাকার অভাবে রাস্তার ধারে পেট্রোল পাম্পের আলোয় আপন তন্ত্রের স্ত্রী সুধা তন্ত্র ছেলে মেয়েদের পড়াশোনার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আর এই দৃশ্য হঠাৎই নজরে আসে সদ্য পঞ্চায়েত ভোটে পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বালাপাড়ার তৃণমূল কংগ্রেসের বিজয়ী প্রার্থী বাবলু বসাকের। তিনিও এ ধরনের ঘটনায় হতবাক। সাথে সাথে এই পরিবারটির সাথে কথা বলে পুনরায় বিদ্যুৎ কানেকশন সহ সমস্ত রকমের সাহায্য সহ পরিবারটির পাশে থাকার আশ্বাস দেন। তবে প্রশ্ন একটাই, এই সময় দাঁড়িয়ে এখনও রাস্তার আলোয় পড়াশোনা করতে হয়। সদ্য পঞ্চায়েত ভোট সমাপ্তি হলো। এত বছর ধরে কারো চোখে পড়লো না এ দৃশ্য। প্রশাসন, পঞ্চায়েত বা প্রধান কোনভাবে কি এই পরিবারটির খোঁজখবর নিয়ে পাশে দাঁড়াতে পারত না?যদি ওই বিষয়ে জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বেনুরঞ্জন সরকার জানান, "এই সময় দাঁড়িয়ে এ ধরনের ঘটনা কোন ভাবেই কাম্য নয়। যদিও এই পরিবারের তরফে আমাদের জানানো হয়নি, জানানো হলে আমরা বিদ্যুৎ দপ্তরের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা করার চেষ্টা করতাম। আপনাদের কাছ থেকে জানলাম খুব শীঘ্রই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে #jalpaiguri #jalpaigurinews #westbengal #breakingnews #newstoday #banglanews #newslive @ubanglatvofficial
What's Your Reaction?