দুদিন এর ছুটিতে কুয়াশা ঘেরা লাভা.....

দুদিন এর ছুটিতে কুয়াশা ঘেরা লাভা.....

May 31, 2023 - 17:51
 0  5

#ভ্রমণ_কথা ছোট্ট ছুটিতে ছোটাছুটি প্রায় মজ্জাগত বদভ্যাসে পরিণত হয়েছে আর সেই সঙ্গে সুযোগ যদি হয় একেবারে মেঘ-কুয়াশার আদর জাপটে পাহাড়ী বৃষ্টিতে মিলেমিশে একাকার হয়ে যাওয়ার তো আটকায় কে! অতপর তৃতীয়বার লাভার উদ্দেশ্যে পাড়ি। কালিম্পঙ এর এই ছোট্ট পাহাড়ী জনপদটা শুধু যে বহুল পরিচিত তাই নয়, নেওড়াভ্যালির প্রবেশদ্বার ছাড়াও, অজস্র পরিচিত-অপরিচিত-অল্পপরিচিত পাহাড়ী জনপদ যেমন রিশপ, লোলেগাঁও, নোকদারা, কোলাখাম, সিলেরিগাঁও, ইচ্ছেগাঁও, চাড়খোল গন্তব্যের মূল সংযোগস্থলও বটে। সকাল সকাল কাঞ্চনকন্যা থেকে মালবাজার স্টেশনে নেমে, গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাত্রা, মাঝে চেল নদীর ঝর্ণার অপরুপ দৃশ্য উপভোগ করে ১২:৩০ নাগাদ পূর্ব নির্ধারিত হোটেলে মালপত্র জমা করে খানিক বিরতি তারপর খাওয়া-দাওয়ার পাট চুকিয়ে বেরোনোর পালা... আজকের গন্তব্য Kagyu T Monastery, যা রত্নঋষি বিহার বুদ্ধিস্ট গোম্পা বা লাভা মোনাস্ট্রি নামেও খ্যাত। অসংখ্য প্রার্থনা কক্ষ, হল, বসার জায়গা ছাড়াও আছে লামাদের নিজস্ব বাসস্থান। অনেকটা জায়গা জুড়ে নির্মিত এই মোনাস্ট্রিটা ঘুরে দেখতেও বেশ খানিকটা সময় লাগে। । পরের দিন সকালবেলা মেঘ কেটে গিয়ে সোনা রোদ্দুর! সকাল সকাল ঘুম-ছুট আমরা ৬:৩০ এ আবার হাঁটা লাগলাম মোনাস্ট্রির উদ্দেশ্যে... ছবি তুলতে হবে তো! ঘন্টাখানেক রোদেলা রঙিলা আহ্লাদীপনা করে, হোটেলে ফেরা।  আমাদের বোলেরো ছুটলো, সঙ্গী আমাদের অবিরাম অতি-উৎসাহি, আপাত অর্থহীন আর কিঞ্চিৎ পাগলাটে আলাপচারিতা আর ড্রাইভার রোজেন দাদার গল্প। ১৪.৫ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করতে প্রায় ঘন্টাখানেক লাগলো, মূলতঃ রাস্তার কারণে। এরপরেই আসল মজা, প্রায় ১ কিলোমিটার পাহাড়ী পাকদন্ডী অবতরণ। কোথাও অল্প সিঁড়ি, কোথাও তাও নেই, খুব সাবধানে নেমে পৌঁছলাম ঝর্ণার নিচে। বেশ খানিকটা সময় কাটিয়ে ফেরার পথ, যা কিনা নিচে নামার থেকেও কঠিন!ফেরার পথে আবার ঝাঁপিয়ে বৃষ্টি... জঙ্গলের ঝোপঝাড় আর গাছগুলো যদিবা খানিক গাড়ির ধূলোয় নুয়ে পড়েছিল, বৃষ্টি মেখে তাদের সে কি রূপ... চোখ ফেরানো দায়! আজ আর হোটেলে ফিরে বেরোনো হলো না, তার অন্যতম কারণ ক্লান্তি আর খানিকটা হলেও, বৃষ্টি। এরপর ফেরার পালা। আগের দিনের তুমুল বৃষ্টির পর আজ আকাশ অনেকটা বেশী ঝকঝকে, হোটেলের বারান্দা থেকে আবছায়া কাঞ্চনজঙ্ঘা দৃশ্যমান, দেখে মন খুশীয়াল। স্নান সেরে ব্যাগপত্তর গুছিয়ে নিয়ে হাতে খানিক সময় পাওয়া গেল... আবারও বাইরে বেরিয়ে এলোমেলো হন্টন।ভারী মিষ্টি কটা মুরগির ছানার দেখা পাওয়া গেল আর রাস্তার পাশে অজস্র নাম-না-জানা ফুল আর অর্কিডের বাহার। ইতি-উতি খানিকটা ঘুরে খান কয়েক বাড়িতে তৈরী স্প্যাগেটির প্যাকেট কিনে, হোটেলে ফেরা।অতঃপর বিদায় জানানোর পালা। বাহন নিয়ে হাজির রোজেন দাদা। বুকের বাঁ-দিকে খানিক মন খারাপের কুয়াশা জমিয়ে পাহাড়ী কুয়াশাকে এবারের মত বিদায় জানিয়ে এগিয়ে চললাম ফিরতি পথের উদ্দেশ্যে। 

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow